1. akashcoxmorning@gmail.com : admin :
সদ্য পাওয়া:
রামুতে এলাকাবাসীর ভালবাসায় সিক্ত হলেন প্রবাস ফেরৎ হাফেজ ওসমান সাংবাদিক হ’ত্যা’চেষ্টা মামলায় কৈয়ারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের জামিন নামঞ্জুর সাংবাদিক হ’ত্যা’চেষ্টা মামলায় কৈয়ারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের জামিন নামঞ্জুর মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ যুবলীগ নেতার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন Kids Nasheed Academy ,এর ২০২৪ সেশনের সেট-আপ সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিধবা নারীকে ধ’র্ষ’ণের অভিযোগ। হ্নীলা পানখালীতে ভিডিও কলে এসে স্কুল শিক্ষার্থীর আ’ত্ম’হ’ত্যা কাটাখালী রওজতুন্নবী (সঃ) দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থিদের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন আশ্রয়ের নামে ঢুকে পড়েছে মিয়ানমারের ১৪ গোয়েন্দা রামু জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী ইফতেখারের বদলী বাতিলের দাবী

রোহিঙ্গা শিবিরে অস্থিরতার পেছনে এরা কারা?

  • আপলোড সময় : Thursday, September 14, 2023

মারজান চৌধুরী: কক্সবাজারের উখিয়া-
টেকনাফের,বালুখালী,পালংখালীর আন্জুমান পাড়া,থাইংখালীর রহমতের বিল,হ্নীলা,হোয়ায়ক্যং,লেদা, মৌলভি বাজার,টেকনাফের সাপ্ররাং,উন্সিপ্রাং, তুমব্রু, নাইক্ষ্যংছড়ি,বান্দরবান সীমান্তে মাদক কারবার যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে।রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তৎপরতার কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ঘিরে খুনোখুনি বাড়ছে। আছে আল ইয়াকিনের দৌরাত্ম্যও। অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে ইয়াবা ও আইস ও ক্যাম্পের চাউল ডালের সিন্টিকেটের ব্যবসার টাকায় কেনা হচ্ছে ভারী অস্ত্র। অস্ত্রধারীরা এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দাদেরও চ্যালেঞ্জ করছে। কমপক্ষে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে মাদক কারবারে সক্রিয়। যাদের ব্যাপারে পুলিশের একটি ইউনিটের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মাদক চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানকালে ডিজিএফআই’র একজন কর্মকর্তা নিহত ও র? যাবের এক কর্মকর্তা আহত হলে জোরদার করা হয়েছে অভিযান।
এপিবিএন ১৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক চোরাচালানের অবস্থা সবসময় স্বাভাবিক থাকে-সে রকম না। বিভিন্ন গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে মাদক পাচারের চেষ্টা করে। আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অস্ত্র কেনার অর্থের যোগান দিতেও মাদকের চালান আনা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এককভাবে মাদকের চোরাচালান করা সম্ভব নয়। কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে এটি করা হয়। সেই গোষ্ঠী কারা আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে,কিছু স্থানীদের সহযোগীতায় মিয়ানমার থেকে মাদকের চালান আনতে উগ্র রোহিঙ্গাদের জড়িত হতে দেখা গেছে বেশি। এদের সঙ্গে বাংলাদেশের চোরাকারবারিরাও জড়িত। বর্তমানে ক্যাম্পগুলো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার বলেন, কক্সবাজার জেলায় ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। এখানে আরসা এবং আল ইয়াকিন সক্রিয় রয়েছে বলে মনে করি না। আরসা ও আলইয়াকিন নামগুলো শুনি, কিন্তু বিস্তারিত জানা নেই।
গোয়েন্দা সূত্র,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গা নেতাদের তথ্যমতে, ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে অন্তত অর্ধশতাধিক ছোট বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে উঠেছে। প্রতিটি বাহিনীতে ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত সদস্য রয়েছে। ক্যাম্পে অধিক পরিচিত সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে রয়েছে মাস্টার মুন্না গ্রুপ, আলোচিত নবী হোসেন গ্রুপ,ক্যাম্প ১৮আব্বাস গ্রুপ, মৌলভী ইউসুফ গ্রুপ, রকি বাহিনী, শুক্কুর বাহিনী, আব্দুল হাকিম বাহিনী, সাদ্দাম গ্রুপ, জাকির বাহিনী, পুতিয়া গ্রুপ, সালমান শাহ গ্রুপ, গিয়াস বাহিনী, মৌলভী আনাস গ্রুপ, কেফায়েত গ্রুপ, জাবু গ্রুপ, আবু শমা গ্রুপ, লেড়াইয়া গ্রুপ, খালেদ গ্রুপ, শাহ আজম গ্রুপ, ইব্রাহিম গ্রুপ ও খলিল গ্রুপ।
এসব গ্রুপে আছেন-ক্যাম্প ১৮ এর আব্বাস গ্রুপের মোহাম্মদ আব্বাস আবদুল জব্বার, নুরুল আমিন, শাহ আলম, মো. কেফায়ত, নুরুন নবী, আবদুল হাকিম, সুলতান, জকির আলম, মো. আব্দুল্লাহ ওরফে দাদা ভাই, বুলু, সুলতান, নবী হোসেন, সফিক, রফিক, মুর্তজা, হামিদুল্লাহ, আবদুস শুকুর, শরীফ হোসেন, মো. রহমান, সবেদ উল্লাহ, আব্দুল্লাহ, ফয়সাল, মো. সোলাম, হামিদ হোসেন, মুহিবুর রহমান, দিলদার, আবু সাইদ, তাহের, ফারুক, মুক্কুস, জুবায়ের, মুস্তফা, আব্দুল্লাহ আইদি, হাসন শরীফ, আব্দুল জলিল, হাফেজ উল্লাহ, আরমান খান, আইয়ুব, আমির হোসেন, নুর ইসলাম, আলী আকবর, কামাল, জাইবু রহমান, নাজিমুদ্দিন, সোনা উল্লাহ ও আরাফাত।
এদের মধ্যে আরসা, আল সাবা, আল ইয়াকিনসহ একাধিক সস্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। যাদের মূল ব্যবসা ক্যাম্পে আধিপত্ত বিস্তারের জন্য কিছু স্থানীয় চক্র মিলে সিন্টিকেট করে চাউল ডাল, ইয়াবা ও অস্ত্র। প্রতিদিন লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালান নানা কায়দায় এদেশে ঢুকে চালান হাতবদল হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে- নবী হোসেন, মাস্টার মুন্না গ্রুপসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিক্তিক বেশিরভাগ সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদের যোগাযোগ রয়েছে। ক্যাম্প অশান্ত করার জন্য সন্ত্রাসী গ্রুপকে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ফ্রিতে দিচ্ছে মিয়ানমার সরকার।
স্থানীয়রা মনে করছেন, মূলত বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরা, আন্তর্জাতিক আদালতে চলা রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত করতে আরসাকে মদদ দিচ্ছে মিয়ানমার।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত ছয় বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২ ধরনের অপরাধে মোট দুই হাজার ১০০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। এই ছয় বছরে অস্ত্র উদ্ধার মামলা ২৮৪টি, মাদক উদ্ধার মামলা এক হাজার ৯৩৬টি, ধর্ষণ মামলা ১১৯টি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় বা আদায়ের চেষ্টার মামলা হয়েছে ৮৯টি। ছয় বছরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ২০৭টি, হত্যা মামলা হয়েছে ২৫০টি, জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে ছয়টি।
যদিও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে ২৬৫টির বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, অপহরণ, বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি, মানবপাচারসহ ১২ ধরনের অপরাধে রোহিঙ্গারাদের নামে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে গত আগস্ট পর্যন্ত মাত্র এক বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২ ধরনের অপরাধে মামলা হয়েছে এক হাজার ৩৬৫টি। এই সময়ে অস্ত্র উদ্ধার ১৩৪টি, মাদক উদ্ধার ৮৭৪টি, ধর্ষণ ২৩টি ও হত্যা মামলা হয়েছে ৩০টি।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ও বাইরে অসংখ্য সশস্ত্র গ্রুপ গড়ে উঠেছে। তারা মাদকের ব্যবসা অপহরণ ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধ করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি এসব সশস্ত্র গ্রুপের টার্গেটে পরিণত হয়েছে স্থানীয়রা। রোহিঙ্গারা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলবেঁধে বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয়দের তুলে নিয়ে মারধর করছে। অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করছে। এতে করে দিন দিন স্থানীয়দের নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ছে। তার দাবি, অন্তত ৩০ হাজার রোহিঙ্গা অস্ত্রধারী রয়েছে।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত থাইংখালী এলাকার ইউপি সদস্য সেলিম বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধ চললেও ইয়াবার চালান আসা বন্ধ হয়নি। আর মাদক কারবারকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পে প্রতিদিন গোলাগুলি অস্ত্রবাজির ঘটনা ঘটেই চলছে। আমার মনে হয় মিয়ানমার পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেকে আশান্ত করে তুলছে। ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুত রয়েছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে এসব অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
মিয়ানমার সরকার তাদের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীগুলোকে অস্ত্র পেতে সহযোগিতা করেছে। মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন সময় এসব অস্ত্র ও পিস্তল আনা হয়েছে। সূত্রটির দাবি, প্রত্যাবাসন ঠেকাতে কৌশলগত কারণে ক্যাম্পকে অশান্ত করে রাখতে চায় মিয়ানমার সরকার।
অভিযোগ আছে, ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করছে কিছু স্থানীয় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী টেকনাফ রঙ্গীখালী এলাকার গিয়াস বাহিনী, সালমানশাহ বাহিনী এবং হোয়াইক্যং কাঞ্চর পাড়ার খাইরুল বশরসহ আরো অনেকেই যা তদন্ত বেরিয়ে আসবে আসল রহস্য? তারা ইয়াবার চালানের বিনিময় অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে বলে জানা গেছে। উখিয়া-টেকনাফে ৩২টি ক্যাম্পেই পরস্পরবিরোধী একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই শিবিরগুলোর সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে খুন, অপহরণ, গুম, লুটপাট স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে।
সম্পতি প্রতি পিস্তল হাতে কয়েকজন রোহিঙ্গা যুবকের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অস্ত্র হাতে একটি ভিডিও বার্তায় ৪ মাঝিকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন মো. হাসিম নামের এক যুবক। ভিডিওতে ওই যুবক দাবি করেন, তার মতো ২৫ জন যুবককে অস্ত্র দিয়েছে ইসলামী সংগঠন‘মাহাজ’ নামের একটি সংগঠন। খুনের শিকার মাঝিদের নামও বলেছেন এই যুবক। তারা হলেন ১৮নং ক্যাম্পের হেড মাঝি জাফর,৭নং ক্যাম্পের ইসমাঈল, কুতুপালং এক্সটেনশন ক্যাম্প-৪ এইচ ব্লকের এরশাদ ও হেড মাঝি আজিমুল্লাহ।তবে এদের হত্যার পিছনে আব্বাস গ্রুপের আব্বাসের হাত রয়েছে বলে একাদিক সূত্রে জানাজায়।
একটি সূত্রে দাবি, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর আরসা চাপে পড়লেও তারা আরও অস্ত্র সংগ্রহ করে অস্থিরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন....
© সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০১৯ কক্স মর্নিং
Site Customized By NewsTech.Com